কিরন আহাম্মেদ।
বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিম, বাংলা বাউল গানের একজন কিংবদন্তি পুরুষ। ১৯১৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী সিলেট বিভাগ এর সুনামগঞ্জ জেলার কালনী নদীর তীরে অবস্থিত এক গ্রাম। যে গ্রামের নাম উজান ধল। ওই গ্রামে বাস করতেন একজন দরিদ্র মহান মানুষ, যার নাম ইব্রাহিম আলী ও তার স্ত্রী নাইওরজান বেগম। ওনাদের ঘরেই জন্ম নেন শাহ আব্দুল করিম। তিনি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারেননি। কিন্তু তার পরেও, তিনি দারিদ্রতার মধ্য দিয়েই চালিয়ে যান তার গান লেখালেখি, গান সুর করা, আর গীতিকবিত্ব মহান সৃষ্টিকর্তার দেয়া জ্ঞ্যানের সমন্বয়ে। তার আধ্যাত্মিক চিন্তা ভাবনা তাকে নিয়ে যেতে শুরু করে অনেক দূর। মনের মাধূরী মিশিয়ে অজস্র গান প্রকাশ করেছেন তার কথায় ও সুরে। শাহ আব্দুল করিম সঙ্গীত সাধনা শুরু করেছিলেন সেই ছেলেবেলা থেকেই। আমরা যতটুকু জানি, শাহ আব্দুল করিম তার সকল পূর্ণতার অনুপ্রেরনা পেয়েছেন বাংলার বিখ্যাত বাউলসাধক ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ ও দুদ্দু শাহ’র দৃষ্টি নন্দনের মধ্য থেকে। তিনি, তার বাউল গানের শুরু করেছিলেন, সাধক রশীদ উদ্দীন, শাহ ইব্রাহীম মাস্তান বকশ্ এর নিকট থেকে। দারিদ্রতার তারনে তিনি কৃষিকাজ করেছেন এবং তার পাশাপাশি গীতি কবিত্ব রচনা করেছেন। তার এই প্রেরনাময় জীবন আমাদের সঙ্গীত জগৎকে করছে আরোও আলোকিত, প্রসারিত ও দীর্ঘায়িত। শুনেছি, যখন তিনি গান রচনা শুরু করেন, তখন থেকে ভাটি বাংলার একজন জনপ্রিয় ব্যাক্তি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। আর এখন সারা বাংলা থেকে শুরু করে সারা পৃথিবী জুড়ে আলোচনায় তিনি। আজ বাউল বাংলায় তার গানের হিসাব তুলনার বাহিরে। হে মহান মহান মানুষ, আপনি ভালো থাকুন ওপারে। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে জান্নাতে ফেরদৌস দান করুক। আমরা জাগিয়ে রাখবো আপনাকে যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী।
তার লেখা সকল গানের মধ্যে জনপ্রিয়, উল্যেখ যুগ্য কিছু গান নিম্নে তোলে ধরা হলো :-
• আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
• বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে
• কেনো পিরিতি বাড়াইলা
• রঙের দুনিয়া তোরে চাইনা
• আসি বলে গেল বন্ধু আইলোনা
• আমি কুলহারা কলঙ্কিনি
• মহাজনে বানাইয়াছে ময়ুরপঙ্খী নাও
• মন মজালে ওরে বাউলা গান
• মাটির পিঞ্জিরাইয় সোনার ময়না
• বসন্ত বাতাসে
শুভ জন্মদিন হে মহান পুরুষ । বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আপনার প্রতি।