মোশারফ হোসেন মুন্না।
আমরা বাঙ্গালী। বাংলা আমাদের মুখের ভাষা। সেই ভাষাকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলো পাকিস্তানি শাসকরা। কিন্তু নিজের গায়ের রক্তের চেয়ে মায়ের ভাষা বেশি সস্মান করি বলে রক্ত দিয়ে রাজপথ করেছি রন্জিত। বাংলা ভাষাকে করেছি মুক্ত। সেই ভাষায় কথা বলে মন, কথা বলে আমাদের অনুভূতি। সেই ভাষাকে ছন্দের কড়িডরে ফেলে বিনোদনের আমেজ তৈরি করেন আমাদের বাঙ্গালী মেধাবী গীতিকারগন। যাদের কথার ছন্দের প্রেমে পরে সুরকার আর বিনোদনের ফ্রেমে বন্ধি হয় বাঙ্গালীর অন্তর। তেমনি একজন সুরকার যিনি ১৯৭০ থেকেই বেতারের তালিকাভুক্ত গীতিকার। আজ সেই যাদুকরী কথার গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির এর শুভ জন্মদিন। যেই সময়টাতে এই মানুষটির জন্ম সেই সময়টা ছিলো মায়ের মুখের মিষ্টি ভাষাকে কেড়ে নেবার সময়। এমন এক সময় তার জন্ম যার জন্মের মাত্র কয়েকদিন পরেই বাংলা ভাষা আমাদের মায়ের ভাষাতে রুপ নেয় সারাজীবন এর জন্য। মনিরুজ্জামান মনিরের জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ জানুয়ারি। দেশের গানের একজন উল্লেখযোগ্য গীতিকার তিনি। যার গানের কথা গুলো পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীকে প্রেরণা দিয়েছিলো।
তার রচিত উল্লেখযোগ্য গানসমূহ হল “প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ”, “সূর্যোদয়েও তুমি সূর্যাস্তেও তুমি”, যেই গানগুলো আজও নতুন হয়ে আছে। এছাড়াও চলচ্চিত্রে ছিলো “যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়”, “ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে”, “কি জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা”। বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের গীত রচনায় অবদানের জন্য তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৪ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে।
মনিরুজ্জামান মনির ১৯৫২ সালের ২৮ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার তেঘরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মনিরুজ্জামান তৃতীয়। ছোটবেলা থেকেই তিনি দৈনিক পয়গাম, দৈনিক পাকিস্তান, সবুজপাতায় নিয়মিত ছড়া লিখতেন। তার মামা উজির মিয়া ছিলেন সিলেট বেতারের কণ্ঠশিল্পী। তার সহযোগিতায় কিশোর বয়সেই তিনি বেতারের জন্য গান লেখার সুযোগ লাভ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি বেতারের তালিকাভুক্ত গীতিকার হয়ে যান। তার এই দীর্ঘ জীবনের সফলতা অর্জনের জন্য সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা। ভালো থাকুক জীবনের প্রতিটি দিন।