সুব্রত মণ্ডল সৃজন।
বাংলার জনপ্রিয় লোকসংগীত দল ‘নকশিকাঁথা ব্যান্ড’ আজ ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ। রোজ শনিবার। তেরো নদী অর্থাৎ নকশীকাঁথার ১৩ বছর উপলক্ষে আজ রাজধানীর ‘ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে’ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবে নকশীকাঁথা ব্যান্ড।
প্রচলিত অর্থে ১৩ বা থার্টিনকে আনলাকি বলা হলেও নকশীকাঁথা ব্যান্ডের জন্য তা সব সময়ই লাকি। গতকাল সেই লাকি থার্টিন পূর্ণ হলো নকশীকাঁথা ব্যন্ডের। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগান বিশ্বের দরবারে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে ‘নকশীকাঁথা’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের প্রায় সব অঞ্চলের বহু লোক গান সংগ্রহ করে সেগুলো এ সময়ের উপযোগী করে মঞ্চ ও টেলিভিশনে পরিবেশন করছেন এই ব্যান্ডের সদস্যরা।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টে’ গান পরিবেশন করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে ‘নকশীকাঁথা ব্যান্ড’।
এই ব্যান্ডের ভোকাল সাজেদ ফাতেমী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগান নিয়ে গত প্রায় ১৫ বছর থেকে গবেষণা ও দীর্ঘ ২২ বছর দেশের প্রথম সারির ছয়টি পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেছেন।
‘নকশিকাঁথা ব্যান্ডে’র প্রথম অ্যালবাম ‘নজর রাখিস'(২০০৮) অ্যালবামের ‘ভোরের শিশির, হাটের গোলমাল, নজর রাখিস, ভালোবাসার গান ও একশ বছর’ শিরোনামে গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
২০১৬ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘নকশীকাঁথার গান’। এই অ্যালবামের ‘নয়া বাড়ি, চোর, সাত আসমান, তুকে লিয়ে’ শিরোনামে গানগুলো দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।
এরপর আরও অন্তত ২০টি নতুন গান কম্পোজিশন করেছে নকশীকাঁথা।
রোহিঙ্গা সংকট, সীমান্ত উত্তেজনা, ফেলানী হত্যা, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বেশ কিছু সংকট নিয়েও গান তৈরি করেছেন ব্যান্ডের ভোকাল সাজেদ ফাতেমী।
আরো কিছু উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে- ভালোবাসার মালা, প্রেমনদীতে তুফান ভারী, বাংলা ভাষার দুর্গতি ইত্যাদি।
নকশিকাঁথা বেড়াতে থাকেন প্রতিভাবান বাউল শিল্পীদের খুঁজে বের করার জন্য এবং তাদের জীবন, গান ও তাদের বাউল হয়ে ওঠার গল্পগুলো তুলে আনেন টেলিভিশনের পর্দায়। নকশিকাঁথা ব্যান্ড বাউল গান নিয়ে অনুষ্ঠান করে বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। আর, আপনাদের কনসার্টের প্রয়োজনে নকশীকাঁথাকে পাবেন ন্যূনতম পারিশ্রমিকেই বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
নকশীকাঁথা ব্যান্ডের সাথে যেসব দরদী প্রাণ কাজ করে যাচ্ছে গানপ্রিয় মানুষের জন্য তারা হলেন:
সাজেদ ফাতেমী: দল প্রধান ও ভোকাল।
জে আর সুমন: অ্যাকুইস্টিক গিটার, রাবাব ও দোতারা।
বুলবুল সাহা: কাহন ও পারকেশন্স।
রোমেল হাসান: মেলোডিকা ও অ্যাকোর্ডিয়ান।
শামস : বেইজ গিটার প্রমুখ।
নকশীকাঁথার প্রতিটি সদস্যের হৃদয়ে আছে অফুরান ভালোবাসা ও প্রাণশক্তি। সেই ভালোবাসা ও সুপ্ত বাসনাগুলোকে বিনে সুতায় ক্রমশ বুনন করে চলছে এই গান পাগল সদস্যরা।
তাই বলি “গানকে ভালবাসুন, বাংলা গানের সাথেই থাকুন।” ‘নকশিকাঁথা’ হয়ে উঠুক সকলের ষড়ঋতুর নকশিকাঁথা। এই কামনায় ‘সঙ্গীতাঙ্গন’।
ধন্যবাদ ও অভিনন্দন