asd
Saturday, November 23, 2024

১৬ই ডিসেম্বর বাঙ্গালীর স্বপ্ন পূরণের দিন…

মোহাম্মদ আমীন আলিফ।
“১৭৫৭ এর সেই মনভাঙ্গা আশা
১৯৪৭শে – বুকে জাগায় ভালোবাসা;
১৯৫২তেও আমরা সেই স্বপ্নের গান গাই
৭১ এর ডিসেম্বরে তোমায় আপন করে পাই।”

এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের ইতিহাসটা অনেক কঠিন, অনেক কষ্টের।
লক্ষ লক্ষ মানুষের ভাঙ্গাগড়ার গল্পে জন্ম নেওয়া এই বাংলাদেশ। কতশত প্রাণ আর লাখো শহীদের রক্তের বর্ণমালায় লেখা হয়েছে- আমার সোনার বাংলা – আমি তোমায় ভালোবাসি। আজ সেই দিন যে দিনের স্বপ্ন দেখেছিল প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের শত শত প্রাণ, শত জনমের স্বপ্নের এই বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। এই দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে সর্বোচ্চ গৌরবের একটি অবিস্মরণীয় দিন।

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্ণ হল আজ। মুক্তির জয়গানে মুখর কৃতজ্ঞ বাঙ্গালী জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে আজ স্মরণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সেই অকুতোভয় বীরদের, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

জাতীয় জীবনে নানা সংকট আর অনিশ্চয়তা থাকলেও আজ ভোরে পুর্ব আকাশে যে নতুন সূর্য উঠবে তা স্মরণ করিয়ে দেবে দিনটি গৌরবের, আনন্দের, বিজয়ের। আজ এক আনন্দের দিন। এমনি এক দিনের প্রতীক্ষায় স্বপ্নে কেটেছে বাঙ্গালীর অনেক বছর। বহু সাধনার সেই দিনটির দেখা মিলেছিল দীর্ঘ নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর।
১৯৪৭ সালে ইংরেজদের শাসন থেকে এদেশ মুক্ত হলেও ফের বাধা হিসেবে দেখা দেয় পাকিস্তানী শোষক গোষ্ঠীর অন্যায় শাসন। বাঙ্গালী বঞ্চিত হতে থাকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে। পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ লুট করে নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে গড়ে তোলা হয় সম্পদের পাহাড়। তাদের সে অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিবাদে ধীরে ধীরে জেগে ওঠে দামাল বাঙ্গালী জাতি। ধাপে ধাপে আঘাত হানতে থাকে শাসনযন্ত্রে। ‘৫২-র ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪-র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ‘৫৭-র স্বায়ত্তশাসন দাবি, ‘৬২ ও ‘৬৯-এর গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মার্চে দুরন্ত বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তির সংগ্রামে। ২৫শে মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী শুরু করে নির্মম নিধনযজ্ঞ। এরপর আসে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা। দখলদার বাহিনীকে বিতাড়নে শুরু হয় অদম্য সংগ্রাম। ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে জীবন দান করেন লাখ বাঙালি। অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জত-সম্ভ্রমের বিনিময়ে অবশেষে ১৬ই ডিসেম্বর আসে সেই কাংক্ষিত বিজয়। সে সময়ের রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৪৮ বছর আগের এদিনে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল বিজয়ী বীর বাঙালির সামনে। স্বাক্ষর করেছিল পরাজয়ের সনদে। পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের দিনটিতে আনন্দের পাশাপাশি বেদনাও বাজবে বাঙালির বুকে। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় জাতি আজ স্মরণ করবে জানা-অজানা সেসব লাখো শহীদকে। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল ভোগ করে পেরিয়ে গেল ৪৮টি বছর।

আমদের এই বিজয়ের আনন্দের দিনটি সুরে গানে এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০১৯ উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে আজ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম সহ আমাদের সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমেও সঙ্গীতাঙ্গন এর পাঠক সহ সকল শ্রোতাদের বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাই।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles