শাহরিয়ার সাকিব।
বাঙালির অন্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উদ্দীপ্ত রাখবার প্রয়াসে ২০১৫ সালের মহান বিজয়-দিবস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় সবাই মিলে দেশের গান গাইবার আয়োজন করছে ছায়ানট। ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দেশগানে সবার গলা মেলানোর আয়োজনে এবারও সাধারণ শিক্ষার বিদ্যালয়, সঙ্গীত বিভাগ সম্বলিত মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেওযুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উদযাপনের ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ সঙ্গীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানট। ‘হাজারো কণ্ঠে দেশগান’ নামের এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল পৌনে চারটায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই নৃত্যগীতানুষ্ঠান। ১৯৭১ সালে যে সময় ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, ঠিক সেই বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে আবারও গাওয়া হবে হাজারো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত। এই পুরো আয়োজনে অংশ নেবে ছায়ানটের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমনকি সেখানে আসা সাধারণ মানুষজনও।এছাড়া গাওয়া হবে ৮টি সম্মেলক গান, সাথে সম্মেলক নৃত্য। একক গান পরিবেশন করবেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ও সেঁজুতি বড়ুয়া এবং আবৃত্তি করবেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান বিকেল পৌনে চারটায় শুরু হয়ে ৪টা ৩১ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
পুরো অনুষ্ঠানটি দীপ্ত টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী উৎযাপনের পর একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন কয়েকজন সংগঠক। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান সিধু ভাই নামে পরিচিত, শামসুন্নাহার রহমান, সুফিয়া কামাল, ওয়াহিদুল হক অন্যতম। সাঈদুল হাসানের প্রস্তাবে সংঠনটির নামকরণ করা হয় ছায়ানট।
১৯৬১ সালে সুফিয়া কামালকে সভাপতি আর ফরিদা হাসানকে সম্পাদক করে প্রথম কমিটি গঠিত হয়। সহ-সভাপতি জহুর হোসেন চৌধুরী, সাঈদুল হাসান। সহ-সম্পাদক সাইফুদ্দীন আহমদ মানিক, মিজানুর রহমান ছানা। কোষাধ্যক্ষ পদে মোখলেসুর রহমান ও সদস্যরা ছিলেন কামাল লোহানী, ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন, আহমেদুর রহমান প্রমুখ। ১৯৬১ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ছায়ানটের প্রথম অনুষ্ঠান পুরানো গানের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে সনজীদা খাতুনের উদ্যোগে বাংলা একাডেমীর বারান্দায় সঙ্গীত শেখার ক্লাস শুরু হয়। সনজীদা খাতুন ও ফরিদা মালিক রবীন্দ্র সঙ্গীত, বজলুল করিম তবলা, মতি মিয়া বেহালা ও সেতার এবং সোহরাব হোসেন নজরুল গীতি শেখাতেন। ঐ সালেই ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১লা বৈশাখ, ১৩৭০ বঙ্গাব্দে ওস্তাদ আয়েত আলী খান এই বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন। সঙ্গীতাঙ্গনের পক্ষ থেকে ছায়ানট ও তার সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।