মোশারফ হোসেন মুন্না।
গান, ও গানের সুরে বিরাজ করে বিনোদন। সেই বিনোদনের ভালো লাগার মধ্য বেচেঁ থাকে গীতিকার, সুরকার আর শিল্পী। সেই গান মানুষকে দোলা দেয় অন্তরে। আর যারা আমাদের বিনোদনের মাধ্যেমে মনকে খুশি করে তাদের মধ্যে গীতিকার একজন যার অবদান গানের মধ্যে গুরুত্ববহ যদিও সবাই তাদের গুরুত্ব বুঝেনা। এমনই একজন মাসুদ করিম যার জন্ম হয়েছিলো ১৯৩৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। জন্ম দিয়ে খুশি আর মৃত্যু দিয়ে কষ্ট। সেই কষ্টটা
মনে হয় মৃত্যু দিবস এলেই। ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনকে ছেড়ে পরলোকে চলে যান মাসুদ করিম। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী। একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশী গীতিকার। দেশ বিদেশের অনেক খ্যাতিমান সুরকারেরা তার রচিত গানে সুর দিয়েছেন এবং বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীরা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য দুইবার শ্রেষ্ঠ গীতিকার বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। মাসুদ করিম কুমারখালী উপজেলার দুর্গাপুর কাজীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা রেজাউল করিম একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা নাহার ছিলেন গৃহিনী।
মাসুদ করিম ঢাকা ও চট্টগ্রাম বেতারে প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কয়েক বছর পরে তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দান করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের জন্য গীত রচনা শুরু করেন। তবে ষাট, সত্তর ও আশির দশকে চলচ্চিত্রের গান রচনা করে তিনি খ্যাতি লাভ করেন।
মাসুদ করিম ১৯৬৫ সালে দিলারা আলোর সাথে চট্টগ্রাম বেতারে পরিচয় ও সেই সূত্র ধরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্ত্রী দিলারা আলো একজন সঙ্গীত শিল্পী। ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। তার রচিত গানের মধ্যে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
যেমন – দুটি চোখে চোখ রেখে, যখন থামবে কোলাহল, জোনাক জোনাক রাত, তন্দ্রা হারা নয়ন আমার, শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাবো, নেই নিঃশ্বাসের বিশ্বাস, মনে কি পড়ে একদিন আমিও ছিলাম, মন তো নয় আর আয়না, যদি নীল সাগরের মুক্ত তুমি চাও, কিছু বল কিছু বল, বাতাসে তোমার সংলাপ শুনি, ঐ আকাশ ঘিরে সন্ধ্যা নামে রাতের আভাসে ইত্যাদি। মাসুদ করিম ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নর্থ আমেরিকান লেবার ডে লং উইক এন্ড এ ডাউন টাউন মন্ট্রিয়ালের শেরাটন হোটেলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশী এসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকার ৩ দিনব্যাপি বাৎসরিক সম্মেলন ফোবানা চলাকালে তার হার্ট অ্যাটাক হয়। মন্ট্রিয়ালে চিকিৎসা চলাকালীন তার দুরারোগ্য ক্যান্সার ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর তিনি মন্ট্রিয়ালে মারা যান। আমরা তার বিদেহী আত্বার মাঘফেরাত কামনা করি। ভালো থাকুক ঐ পাড়ে।