– সালমা আক্তার।
অষ্ট প্রহরের চক্রে সময় বয়ে যায় প্রতিনিয়ত। কালে পরিক্রমায় কেউ কেউ ধরণীকে কিছু দিয়ে যেতে ভালোবাসে, কেউ কেউ পেতে ভালোবাসে, চাওয়া-পাওয়ার চিরাচরিত নিয়মের খেলায় কিছু দিয়ে যেতে ভালোবেসেছিল কন্ঠশিল্পী ফিরোজা বেগম, কন্ঠ সাধনায় তিনি শ্রোতাদের মনে ভালো লাগার শিহরণ তুলতে আজীবন চেষ্ঠা করেছেন। ফিরোজা বেগম ১৯৩০ সালে ২৮ জুলাই ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান জেলা) রাতইল ঘোনাপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। শৈশবেই তাঁর সংগীতের প্রতি ছিল অনুরাগ। ১৯৪০-এর দশকে তিনি সংগীত ভুবনে পদার্পণ করেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যায়নকালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে গানে কন্ঠ দেন। দশ বছর বয়সে ফিরোজা বেগম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্যে আসেন এবং তাঁর কাছ থেকে তালিম নেন। নজরুলের গান নিয়ে প্রকাশিত তাঁর প্রথম রেকর্ড বের হয় ১৯৪৯ সালে। বিভিন্ন দেশে তিনি ৩৮০টির বেশি একক সংগীতানুষ্ঠানে তিনি অংশ গ্রহণ করেন। নজরুল সংগীত ছাড়াও তিনি আধুনিক গান, গজল, কাওয়ালী, ভজন, হামদ-নাত সহ বিভিন্ন ধরনের সংগীতে কন্ঠ দেন। শিল্পচর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে ‘স্বাধীনতা পুরষ্কার’ লাভ করেন।
এছাড়া অর্জন করেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র পুরষ্কার, নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক, সেরা নজরুল সংগীতশিল্পী হিসেবে একাডেমী স্বর্ণপদক, একাধিকবার নজরুল একাডেমী পদক, চুরুলীয়া স্বর্ণ পদক, মেরীল প্রথম আলো পুরষ্কার সহ আজীবন সম্মাননা পুরষ্কার অর্জন করেন। ২০১২ সালে তিনি ‘বঙ্গ সম্মান’ পুরষ্কার গ্রহণ করেন। সঙ্গীত সাধক ফিরোজা বেগম আজীবন গানের মাঝে তুলে ধরতে চেয়েছেন প্রাণের কথা। সঙ্গীতাঙ্গন পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলার মহারত্ন ফিরোজা বেগমের জন্মক্ষণের শুভদিনে সীমাহীন শুভেচ্ছা ও নিরন্তন শ্রদ্ধা। কর্ম গুনেই তিনি অমর-অক্ষয় থাকুক, কর্মগুনেই তিনি উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে থাকুক প্রাণে প্রাণে, গানে গানে।