– সালমা আক্তার।
কখনো কখনো সচেতনে কখনো কখনো অচেতনে কন্ঠ নির্বাক হয়ে যায়, প্রতিক্ষিত সচেতন স্বজনেরা নির্বাক ছিল একটি সুস্থ জীবনের প্রত্যাশায়, অচেতনে নির্বাক ছিলেন দেশ বরেণ্য কন্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী, অত্যন্ত নির্মম কষ্টের সত্য একুশে পদক প্রাপ্ত সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছিল। সিঙ্গাপুরে নেবার পর পর পর তিনবার হার্ট আ্যাটাক জীবনকে সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, হার্টে চারটি ষ্টেন্ট পরানো হয়েছিল!
স্মৃতির প্রহর ছেয়ে জীবনমৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার তরীখানি বাইতে চেষ্টা করেছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দী! সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একবার হার্ট আ্যাটাক হয়েছিল, দোয়া ও দাওয়া সবই যেন স্রষ্টার কৃপার কাছে মাথা নত করে হেরে গেল, সিঙ্গাপুরে বাবার সাথে নিষ্ঠুর সময়গুলোর স্বাক্ষী হয়ে ছিলেন সুবীর নন্দীর মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী। বারবার হার্ট আ্যাটাক আশার আলো নিভিয়ে দিয়েছে অনেকটা চিকিৎসকদের, শরীরের মাল্টিপল অরগান ফেইলিওর অবস্থায় হয়ে যায় তবুও ক্ষীণ আলো নিয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছিল জাতীয় বার্ন আ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক সামন্ত লাল, জামাতা রাজেশ শিকদার, পরিবারের স্বজনসহ হাজার হাজার ভক্ত শ্রোতা।
হাজার প্রাণের আকুতি, হাজার প্রাণের প্রার্থনার সাথে সঙ্গীতাঙ্গনের সকলের প্রার্থনা ছিল আসুক দেশ বরেণ্য সুবীর নন্দী, ভাগ্যের বিধান মানতে হয়, আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে চারটায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন একুশে পদক প্রাপ্ত সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দী! গত ১২ই এপ্রিল মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে পরিবারের সবাই মিলে সেখানে যান একটি অনুষ্ঠানে। তাঁর দু’দিন পর ১৪ই এপ্রিল ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে যাবার জন্য বিকেলে মৌলভীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গলে উদ্দেশ্যে বের হন এবং ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত এগারোটার দিকে তাঁকে সিএমএইচে নিয়ে আইসি ইউ তে ভর্তি করা হয়, অবস্থার আরও অবনতি দেখে লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৩০ এপ্রিল ঢাকার সি এম এইচ থেকে এয়ার আ্যম্বুলেন্সে বরেণ্য কন্ঠ শিল্পী সুবীর নন্দীকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।