– কবি ও সাহিত্যিক রহমান ফাহমিদা।
জনপ্রিয় একজন কণ্ঠশিল্পী তিমির নন্দী। আধুনিক গানের পাশাপাশি তিনি নজরুল সংগীত, উচ্চাঙ্গ সংগীত এবং বিদেশী ভাষায়ও গান করে থাকেন। ১৯৭১সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তিমির নন্দী যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে রেডিও ও টেলিভিশনে তালিকাভুক্তি শিল্পী হিসেবে তিমির নন্দীর যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে কলেজে ছাত্র থাকা অবস্থায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকারের বৃত্তি পেয়ে তিমির নন্দী মিউজিকে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাশিয়ায় চলে যান। সেখান থেকে মিউজিকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিমির নন্দী বাংলাদেশের প্রথম শিল্পী, যিনি ইউরোপ থেকে সংগীতে মাস্টার্স করেছেন। তাঁর বেশ কয়েকটি একক, দ্বৈত ও যৌথ গানের ক্যাসেট ও সিডি প্রকাশিত হয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এই স্বনামধন্য গায়ক এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক তিমির নন্দীর সঙ্গীত জগতে ৫০ বছর পূর্তি প্রথম সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ এক্স স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন সংক্ষেপে LEXSA। এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কামরুজ্জামান আজাদ(সদস্য সচিব), ক্যান্সার স্পেলিষ্ট প্রফেসর গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক (আহবাহক) এবং আরও অনেকে।
২৯শে মার্চ ২০১৯, বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে শুরু করে রাত সাড়ে নয়টায় শেষ হয়। LEXSA-এর সদস্য সচিব কামরুজ্জামান আজাদ সঙ্গীতাঙ্গনকে জানান, এই অনুষ্ঠানে তিমির নন্দী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানগুলি থেকে পাঁচটি গান গেয়েছেন এবং অন্যান্যদের অনুরোধে বেশ কয়েকটি গান করেছেন।
সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে কন্ঠসৈনিক তিমির নন্দীর কাছে তাঁর এই ৫০ বছর পূর্তি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে, তাঁর অনুভুতি কেমন ছিল তা জানতে চাইলে তিমির নন্দী বলেন- আমি অভিভুত! কেন না আমি যেই স্কুলে পড়তাম (লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ) সেই স্কুলের জুনিয়র ছেলেপেলেরা, তাঁরা যে আমার কথা মনে রেখেছে এবং আমার কথা মনে রেখে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, এটার জন্য প্রথমত লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ এক্স স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন -এর সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমিতো এই স্কুল থেকে পাশ করে গেছি, সেই কবে! ওরা আমাকে সম্মানিত করেছে, আমাকে মূল্যায়ন করেছে এই ভেবে যে, এই লোকটা আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিল এবং ৫০ বছর ধরে গান গেয়ে যাচ্ছেন তাঁকে সংবর্ধনা দেয়া উচিত। তাই হয়তো তাঁরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। তবে একটা অন্যরকম অনুভূতিতো অবশ্যই ছিল, কেন না আমি যেই স্কুলের ছাত্র ছিলাম এবং সেই স্কুলেই আমার গানের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রথম অনুষ্ঠান। ১৯৬৯ সালে এখান থেকেই আমার যাত্রা শুরু মিডিয়াতে আর এখানেই আমার গানের ৫০ বছর পূর্তির প্রথম সংবর্ধনা দিল এবং সেটা হল মার্চ মাসে। এটা একটা বড় অর্জন! আমি বলবো আমার এবং ওদেরও। খুব ভালো লেগেছে। ফিলিংস আর কি! এটা তো বিশাল বড় ভালোলাগা। আমি মনে করি সবই আল্লাহতায়ালার ইচ্ছা। ৫০ বছর ধরে এখনো গেয়ে যাচ্ছি এবং আমি আশা করি যতদিন বাঁচবো এমনই করে গেয়ে যাব, যদি সৃষ্টিকর্তা চান।