asd
Friday, November 22, 2024

উদীচীর সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালা সম্পন্ন…

– মরিয়ম ইয়াসমিন মৌমিতা।

১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর শিল্পী-সংগ্রামী-কৃষক নেতা সত্যেন সেনের নেতৃত্বে প্রগতিশীল চিন্তাচেতনা সমৃদ্ধ একদল তরুণ সাংস্কৃতিক সংগঠকের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় উদীচী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে
সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ন্যায়সম্মত, প্রগতিশীল আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উদীচী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, মৌলবাদমুক্ত, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন উদীচীর শিল্পী-কর্মীরা। দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উদীচীর সাড়ে তিন শতাধিক জেলা ও শাখা সংসদে একযোগে জাতীয় পতাকা ও সংগঠন পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও সংগঠন সঙ্গীত পরিবেশন এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে নতুন প্রতিজ্ঞা নেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হলো উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণ জয়ন্তী সমাপণী অনুষ্ঠানমালা।

২৯ অক্টোবর, সোমবার ছিল উদীচীর মূল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন এবং সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে তিন দিনব্যাপী উৎসবের সমাপনী দিন। এদিন বিকেল ৪টায় রাজধানীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় ও সংগঠন সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদ এবং সংগঠন পতাকা উত্তোলন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। এরপর শুরু হয় উদীচীর বর্তমান ও পুরোনো কর্মী-সংগঠকদের স্মৃতিচারণ পর্ব। এ পর্বে বিভিন্ন সময়ে উদীচীর সংগঠক ও কর্মীর ভূমিকা পালন করা ব্যক্তিরা নানা সময়ে উদীচীর সঙ্গে সম্পৃক্ত সুখ-দুঃখের কথা সাবলীল ভঙ্গিমায় তুলে ধরেন। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় এ পর্বে আলোচনা করেন উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ সেলিম, রেজাউল করিম সিদ্দিক রানা, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির সিরাজ প্রমুখ।

এরপর শুরু হয় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন পর্ব। এ পর্বে উদীচীর সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন উদীচীর সাবেক সভাপতি কামাল লোহানী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সাংস্কৃতিক
পর্ষদের আহবায়ক হায়দার আনোয়ার খান জুনো, সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি তপন মাহমুদ, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রণয় সাহা প্রমুখ। আলোচনা করবেন আমন্ত্রিত অতিথি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট গণসঙ্গীত শিল্পী শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, ত্রিপুরার শিল্পী বিভু ভট্টাচার্য্য এবং ফ্রান্সের উবারভ্যালিয়ে টাউন হলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তা কার্লোস সেমেদু। সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক
পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী এবং এফ মাইনর। এছাড়া একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট গণসঙ্গীত শিল্পী শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার ও বিমল দে, বিশিষ্ট
গণসঙ্গীত শিল্পী সোহানা আহমেদ, তানভীর আলম সজীব, লিজু বাউলা, অংশুমান দত্ত অঞ্জন, উদীচী জামালপুরের তরুণ শিল্পী ইউনুস আলী প্রমূখ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী কাজী মদিনা এবং জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। ‘আঁধারবৃন্তে আগুন জ্বালো, আমরা যুদ্ধ আমরা আলো’- এই স্লোগান ধারণ করে ২৭ অক্টোবর শুরু হয়েছিল উদীচীর সুবর্ণ জয়ন্তী সমাপণী অনুষ্ঠানমালা।

সমাপনী আয়োজনের দ্বিতীয় দিনের সন্ধ্যায় তাদের উদযাপনে ছিল নাচ, গান, কবিতা ও আলোচনা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পী অবিনাশ বাউল। তিনি দুটি গান গেয়ে শোনান ‘মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে’ ও ‘জানিতে চাই দয়াল তোমার আসল নামটা কি’। তারপর শুরু হয় স্মৃতিচারনা পর্ব, এসময় নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণানা করেন উদীচী’র বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বে থাকা নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ। বক্তব্য দেন অপার বাংলার
গণসঙ্গীত শিল্পী বিপুল চক্রবর্তী ও অনুশ্রী চক্রবর্তী এবং জিং ওয়াং (প্যারিসের ব্রানলি জাদুঘরের কর্মকর্তা )।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles