– মোশারফ হোসেন মুন্না।
ইসলাম ধর্মাবলম্বিদের সবচেয়ে বড় দু’টো ধর্মীয় উৎসবের একটি হলো ঈদুল আযহা। বাংলাদেশে এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামে পরিচিত। এই উৎসবকে ঈদুজ্জোহাও বলা হয়। ঈদুল আযহা মূলত আরবী বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’। আসলে এটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ত্যাগ করা। এ দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল আল্লাহর নামে কোরবানি করে বা জবাই দেয়। বাঙ্গালী মুসলমানরা নামাজের পরে পুরো পরিবার একত্রে সকাল বেলা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য দিয়ে নাস্তা করে। সকালের এই নাস্তাতে থাকে নানান ধরনের মিষ্টান্ন। নাস্তা খাবার শেষে মুসলমান পুরুষেরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে কোরবানির প্রস্তুতি নিতে থাকে। কোরবানী শেষে কোরবানীর প্রথানুযায়ী কোরবানীর মাংশ গরীব, আত্নীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়। এ দিনে প্রত্যেক মুসলমান অন্যদের বাড়িতে বেড়াতে যায় আনন্দ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। বাঙ্গালী মুসলিম সমাজে এ উৎসবটি কেবল মুসলমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনা, অন্যান্য ধর্মাম্বলীরাও অংশগ্রহন করে উদযাপনে। তারপর শুরু হয় ঈদ বিনোদন। ঈদের আনন্দকে দিগুন করে দেয় বিনোদন। তাই সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে সারা বিশ্বের মানুষকে জানাই ঈদ মোবারক। সঙ্গীতকে ভালোবেসে সঙ্গীতাঙ্গনের সাথে থাকার নিমন্ত্রণ। ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে অনেকে সুন্দর সুন্দর গানও উপহার দিয়েছেন। আজ আমরা তা নিয়ে আলোচনা করবো। জানবো ঈদের বাড়তি আয়োজন সম্পর্কে –
এই কোরবানি ঈদের উপলক্ষে একটি গান তৈরি হলো এবার। গানের নাম ‘কোরবানির ঈদ এলো কোরবানির ঈদ’। গানটির কথা লিখেছেন কবি শাহ আলমগীর। আর সুর করেছেন মিজার দৌলত। সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন লিটন দাশ ও রুমি সেন। চলতি প্রজন্মের চারজন শিল্পী এ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তারা হলেন- বিন্দু কনা, নওরিন, অবিনাশ বাউল ও কামরুজ্জামান রাব্বী। গানটি প্রসঙ্গে এর গীতিকবি শাহ আলমগীর বলেন, কোরবানি ঈদ আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধের জায়গা। সে জায়গা থেকেই এ গানটি তৈরি করেছি আমরা। তরুণ শিল্পীরাই এখানে কণ্ঠ দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস গানটি কোরবানি ঈদে সবার ভালো লাগবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ নিয়ে গীতিকার ও সুরকার মাহবুবুল এ খালিদের লেখা একটি গানে আলাদা সুর দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় দুই সুরকার। তারা দু’জন হলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এবং ইমন সাহা। একই কথায় দুই সুরকারের ভিন্ন ভিন্ন সুরে করা গানটির দুটি ভার্সনই মাহবুবুল এ খালিদের নিজস্ব ওয়েবসাইট এ প্রকাশিত হয়েছে। ‘বছর ঘুরে এলো ফিরে’ শিরোনামের ওই গানটিতে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুর দেয়া ভার্সনে কণ্ঠ দিয়েছেন দিনাত জাহান মুন্নি ও সাব্বির। আর ইমন সাহার সুরে সমবেত কণ্ঠের ভার্সনটি গেয়েছেন সালমা, কোনাল, সাব্বির ও আজিজ।
ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ইউটিউবের ‘খালিদ সঙ্গীত’ চ্যানেলেও গানটির দুটি ভার্সনই প্রকাশ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গীতিকার মাহবুবুল এ খালিদ বলেন, একই কথায় দুই জনপ্রিয় সুরকারের দেয়া সুরে ভিন্ন ভিন্ন শিল্পীর গাওয়া গান একটি বিরল ঘটনা বলা যায়। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এবং ইমন সাহা দুটি গানের সুর ও সঙ্গীতায়োজন বেশ যত্ন নিয়ে করেছেন। দু’জনার সুরেই ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য রয়েছে। আশা করছি শ্রোতাদের কাছে গানটির দুটি ভার্সনই অনেক ভালো লাগবে।
একসময়ের সাড়া জাগানো ব্যান্ড প্রমিথিউস। আর এর ব্যান্ডলিডার বিপ্লব।
কোরবানি নিয়ে বিপ্লবের জনপ্রিয় একটি গান রয়েছে। গানের কথাগুলো হচ্ছে ‘কোরবানি কোরবানি, আল্লাহু আকবর, দিন দুনিয়ার মালিক আল্লাহ পরোয়ার দিগার’ গানটি ২০০০ সালের দিকে একটি মিক্সড এ্যালবামে মুক্তি পায়।
এদেশের অত্যন্ত গুণী কি-বোর্ডিস্ট ও সঙ্গীত পরিচালক নাদিম। সম্প্রতি ঈদুল আজহা উপলক্ষে ‘কোরবানি’ নামের একটি গান নির্মাণ করেছেন। সাধারণত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে একাধিক গান রিলিজ হয়ে থাকে। সেই হিসেবে কোরবানির ঈদ নিয়ে গানের সংখ্যা খুবই কম। সুফি ঘরানার এই গানটির নান্দনিক মিউজিক ভিডিও রিলিজ হয়েছে ইউটিউব চ্যানেলে। গানটি প্রসঙ্গে নাদিম বলেন, অনেকদিন ধরেই গানটির প্ল্যান মাথায় ছিল। অবশেষে এবারের ঈদে দর্শক-শ্রোতাদের জন্য গানটি রিলিজ করলাম। সাধারণত এই ত্যাগের ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের গান খুবই কম। সেই লক্ষ্যেই এই গানটিকে আমি মনে করি আজীবনের একটি রেকর্ড হয়ে থাকবে। গানটি সুফি রক ঘরানায় নির্মাণ করেছি। আশা করছি দর্শক-শ্রোতাদের জন্য ঈদের বিশেষ উপহার হিসেবে গানটি থেকে যাবে।
সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে আবারও জানাই ঈদের শুভেচ্ছা ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক।