– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।
ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টাতে হবে আর কদিন পর। দেখতে দেখতেই যেন চলে গেল ২০১৭ সাল। বর্তমান সফলতা নিয়েই মানুষ আগামী দিনের পথ চলেন। ইতোমধ্যেই ছক কষেছেন আগামী দিনের নতুন ভাবনায়। সঙ্গীতের মানুষরাও এর বাইরে নন। নতুন বছরেও সুন্দর সুন্দর গান উপহার দেবেন শ্রোতাদের এই প্রত্যাশা সবার। ২০১৭ সালে অসংখ্য গান প্রকাশ হয়েছে। সে তুলনায় খুব কমসংখ্যক গানই ছিল আলোচনায়। ডিজিটালি গান প্রকাশ গত কয়েক বছরের তুলনায় হিসাব করলে দেখা যায় এ বছরই বেশি প্রকাশ হয়েছে। প্রতিটি উৎসবে চাকচিক্য, ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিও উপহার দিয়েছেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিছু কিছু মিউজিক ভিডিও ছিল সত্যিই দেখার মতো। ভিডিও নির্মাণে মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন নির্মাতারা। সঙ্গীতাঙ্গনের অনেকেই মনে করেন, ডিজিটাল যুগের কেবল শুরু হলো। এর সুফল পেতে একটু সময় লাগবে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বেড়েই চলেছে। প্রতিটি চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার যখন ২০, ৩০ লাখ বা আরও বেশি হবে তখন শ্রোতাদের কাছে গান ছড়িয়ে যাবে সহজে। সঙ্গীতাঙ্গনের জন্য আরেকটি সুখবর ছিল বেশ কয়েকটি গান এ বছর কোটির
ঘর পার করেছে। কোটি পর হওয়া গানগুলোর গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও শিল্পীকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানিয়েছেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। এ দৃশ্য সত্যিই ছিল ভালো লাগার, আনন্দের।
বছরের শুরু থেকেই গান প্রকাশ করে আলোচনায় ছিলেন বেশ কয়েকজন সঙ্গীতশিল্পী। এর মধ্যে বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর ছিলেন বছর জুড়েই আলোচনায়। উপহার দিয়েছেন সেরা কিছু গান, কিছু মিউজিক ভিডিও।
প্রথমবারের মতো অন্য শিল্পীর গানে মডেল হয়েছেন। জুয়েল মোর্শেদের সুর ও সঙ্গীতে ‘আগুন’ গানের মিউজিক ভিডিও দিয়ে নতুনরুপে যাত্রা করেন সঙ্গীত জগতে। আগুন গান উপহার দিয়ে শ্রোতা-দর্শকদের নজড় তার দিকে ভেড়ান। এরপর বছরজুড়েই একের পর এক ভালো গান উপহার দেন আসিফ আকবর। সাদা আর লাল, নেই প্রয়োজন, কী করে তোকে বোঝাই’ মিউজিক ভিডিও আসিফ আকবরকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যায়।
কী করে তোকে বোঝাই গান দিয়ে আলোচনায় আাসেন কর্নিয়া।
হাবিব ওয়াহিদ শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন ‘ঘুম’ শিরোনামের গান। গান নিয়ে যতটা না আলোচনায় ছিলেন, তারচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন স্ত্রী রেহানকে ডিভোর্স ও মডেল তানজিন তিশার সঙ্গে প্রেম, বিচ্ছেদ নিয়ে।
শিল্পী ইমরান। যে কোনো উৎসবে তিনি শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন গান। ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত গানগুলোর মধ্যে ‘মন খারাপের দেশে’, ‘ধোঁয়া’, ‘ঠিক বেঠিক’, ‘লাগে বুকে লাগে’, ‘আমার ইচ্ছে কোথায়’ প্রভৃতি গান গেয়ে হয়েছেন প্রশংসিত।
সঙ্গীতশিল্পী মিনার প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকটি গান। এর মধ্যে কারণে অকারণে, দেয়ালে দেয়ালে, আবারসহ প্রভৃতি গান ছিল মিনার ভক্তদের পছন্দের তালিকায়।
তাহসান গান নিয়ে এ বছর ছিল কিছুটা অনুজ্জ্বল। বছরজুড়েই গান প্রকাশ করেছেন কাজী শুভ। একাধিক গান প্রকাশ করলেও ‘বউ এনে দেয়’ গানটি শ্রোতারা ভালোভাবে নিয়েছে।
বেলাল খান একাধিক গান প্রকাশ করলেও কোনো গান নিয়ে তিনি আলোচনায় ছিলেন না।
আলোচনায় ছিলেন না আরফিন রুমি। বছরের শুরুর দিকে ‘দেহবাজী’ এ্যালবাম নিয়ে শ্রোতাদের সঙ্গে ছিলেন।
সঙ্গীতশিল্পী ইলিয়াস হোসাইনের সময়টা খারাপ যাচ্ছিল গত কয়েক বছর। এ বছর তিনি ‘না বলা কথা ৪’ গানটি দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে হৃদয় খানকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, এ বছরও ছিলেন আলোচনার বাইরে।
এফ এ সুমন প্রকাশ করেছেন একক এ্যালবামসহ বেশ কয়েকটি সিঙ্গেলস গান। এর মধ্যে ‘পাগলি’রে গানটি শ্রোতারা পছন্দ করেছেন।
তানজীব সারোয়ার গত বছর ‘মিথ্যা শিখাইলি’ গান নিয়ে আলোচনায় থাকলেও এ বছর তিনি ছিলেন আলোচনার বাইরে।
গত বছর প্রীতম হাসান আলোচনায় থাকলেও এ বছর ‘জাদুকর’ গানটির আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।
সিনিয়র সঙ্গীতশিল্পীরা এ বছর দূরেই ছিলেন। কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী, বাপ্পা মজুমদার গান প্রকাশ করে শ্রোতাদের সঙ্গে ছিলেন।
নারী কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে অনেককে এ বছর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বছর জুড়ে গান নিয়ে ব্যস্ত সময় কেটেছে ঐশীর। অনুষ্ঠান, টিভি লাইভ কনসার্টসহ সরব ছিলেন সবখানে। একের পর এক নতুন গান উপহার দিয়ে শ্রোতাদের সঙ্গে ছিলেন এই গায়িকা।
সঙ্গীতশিল্পী সালমা শ্রোতাদের সঙ্গে ছিলেন। বেশ কিছু গান প্রকাশ হয়েছে তার।
পঞ্চম একক এ্যালবাম ‘শুনতে চাই তোমায়’ উপহার দিয়ে শ্রোতাদের সঙ্গে ছিলেন ন্যানসি।
সঙ্গীতশিল্পী কনার চলচ্চিত্রের ‘ও ডিজে’ গানটি সারা দেশে বাজতে শোনা গেছে।
কনা বরাবরই ফিল্ম, অডিও, স্টেজসহ সমানতালে ব্যস্ত ছিলেন। সংগীতশিল্পী কোনালের ‘বন্ধু’ গান বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
সঙ্গীতশিল্পী মিলনের ‘লক্ষ্মীসোনা’ গানটি শ্রোতারা বেশ ভালোভাবে নিয়েছেন।
২০১৭ সালে অনেক জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী গান প্রকাশ করে শ্রোতাদের সঙ্গে ছিলেন। পেছনের দিকে না তাকাই। আগামী বছর সঙ্গীতাঙ্গন থাকুক আরও উজ্জ্বল।