– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।
কার ভিতরে কি প্রতিভা আছে তা কেউ বলতে পারেনা। সময় ও সুযোগ পেলে প্রতিভার প্রসার করতে পারে। জীবনে এই সুযোগ ক’জনার ভাগ্যেই বা ঘঠে। আমাদের মিউজিক ইন্ডাট্রিতে সুরকার, গীতিকার, গায়ক ছাড়াও বিশেষ অবদান আছে মিউজিসিয়ান (যন্ত্রশিল্পীদের)। আধুনিক এ বিশ্বে কত ধরণের যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। নতুন নতুন যন্ত্র নতুন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। যন্ত্রের ব্যবহার সঙ্গীতকে করছে আরো শ্রুতি মধুর। এমনই অসাধারণ একটি নতুন যন্ত্র নিয়ে আজ আলাপ করছি যন্ত্র উদ্ভোদক মেধাবী গিটার বাদক যার সরদেও আছে বিশেষ জ্ঞান। তিনি হলেন বাংলাদেশের উদিয়মান তরুন যন্ত্র শিল্পী নাসির উদ্দিন। তিনি সাম্প্রতিক সময় একটা নতুন যন্ত্রের প্রকাশ ঘটিয়েছেন যার নাম তিনি নিজেই রেখেছেন সারগীট। এ নিয়ে নাসিরের সাথে কথা হয় সঙ্গীতাঙ্গন এর। তিনি বলেন আমি যখন ২০০৪ সালে বাংলাদেশ বেতারে যোগ দেই তার আগে ২০০৩ সালে আমি মিউজিকে গ্রেজুয়েশন শেষ করি। আর তার পর ২০১২/ ১৩ সালে আমি প্রফেশনালী কাজ শুরু করি। একটি লাইভ অনুষ্ঠানে আমি গিটার বাজানো শুরু করলাম সেটা হলো মহনা টিভিতে। নজরুল সঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত এই সব অনুষ্ঠানে বাজাই। তো গিটার প্রফেশনালী বাজাই কিন্তু সরদে শুধু কোন রকম ধারণা তখন। আমি তখন মনে মনে ভাবি যে কি করে আরো ভালো কিছু করা যায়। তখন থেকেই আমার মন মানসিকতা এ বিষয়ে ঝুকে। তখন গিটারে ২টি চিকারি তার ও ১ টি জুয়ারী তার লাগিয়ে বাজাতে থাকি। দীর্ঘ ৮ মাস আমি ঘরে বসে এর বাজানোটা আয়ত্ত করলাম। এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাজাতে লাগলাম আর সবাই আমাকে উৎসাহ দিতে লাগলো। সবাই খুব ভালো ভাবেই গ্রহণ করেছে এটা। আমি বিভিন্ন চ্যানেলে ভিডিও দিয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে এর কথা সবাইকে জানাই। আর সবাই সেটা পছন্দ করেছে। যেহেতু আমি সরদে তেমন ভালো ছিলাম না তাই আমি শিল্পকলার ওস্তাদ ইউসুফ খান সাহেবের কাছ থেকে তালিম নিতে থাকি। ওস্তাদ আমাকে অনেক সহযোগীতা করেছেন। তার সহযোগীতায় আমি সরদের অভিজ্ঞতা অর্জন করি। তার কছে জানতে চাওয়া হয় তার তৈরি সাবগীট সম্পর্কে। তিনি বলেন আমার যে যন্ত্রটি তা আমি যেভাবে গঠন করেছি তা বলছি। সরদ এবং গীটার থেকে নামকরণ করা হয়েছে সারগীট নামক এই বাদ্যযন্ত্রটি। কারন এতে গীটারের যে ৬ টি তার সেটির কোন পরিবর্তন করা হয়নি। তবে হ্যা গীটারটি ক্ল্যাসিকাল গীটার/ নাইলন স্ট্রিং গীটার, শুধু মাত্র নাইলন স্ট্রিং এর পরিবর্তে শুধু স্টিল স্ট্রিং ব্যাবহার করা হয়েছে। এর সাথে সরদের তরফের তার ১২টি, জোয়ারির তার ৩টি এবং চিকারির তার ২টি ব্যাবহার করা হয়েছে এবং এই তার গুলি সংযোজন করতে কিছু অংশ বিশেষ ব্যাবহার করা হয়েছে যা নতুন করে তৈরি করতে হয়েছে। এখন আমরা দেখি সরদ এবং গীটারের সমন্বয় কি ভাবে হয়ছে।
সরদঃ
১। সরদের মুল তার ৪টি
২। সরদে তরফের তার ১৫টি
৩। সরদে জোয়ারির তার ৪টি
৪। সরদে চিকারির তার ২টি
সারগীটঃ
১। সারগীটের মুল তার ৬টি
২। সারগীটে তরফের তার ১২টি ব্যাবহার করা হয়েছে
৩। সারগীটে জোয়ারির তার ৩টি ব্যাবহার করা হয়েছে
৪। সারগীটে চিকারির তার ২টি
এখন আসি বাজানোর পদ্ধতিঃ
বাজানোর ক্ষেত্রে একটু পরিশ্রম ও কিছু সূখ্য হিসেব চলে আসে। কারন যখন ৬ তারের গীটারের সাথে আরো ১৭টি তার সংযুক্ত হয়েছে তখন একটু সুখ্য হিসেব করে অবশ্যই বাজাতে হবে। আর যেটা বিশেষ করে ক্ল্যাসিক্যাল বাদ্য যন্ত্র যেমন সেতার, সরদ ইত্যাদি। যেমন সরদ বাজাতে তরফের তার, চিকারির তার, জোয়ারির তার, এ গুলি এক সঙ্গে সুর না বেধে বাজানো সম্ভব নই। এ ক্ষেত্রেও আমাকে একটু চিন্তা করে বাজাতে হবে। তবে অবশ্যই এ গুলির ব্যাবহার অর্থাৎ জোয়ারি, চিকারি, তরফের ব্যাবহার কি ভাবে করতে হবে তা জানতে হবে। তবে এতে বাড়তি যেটা পাওয়া তা হচ্ছে তরফ, চিকারি জোয়ারি ব্যাবহার না করে গীটারের ৬টি তার গীটারের মতো করে অনায়াসে বাজানো সম্ভব। এবং জোয়ারি, চিকারি, তরফ একইসাথে ব্যাবহার করে তাতে অনেক কিছু পাওয়া সম্ভব। যা বাজিয়ে দেখানো সম্ভব হয়েছে।