“প্রতিদিন কত খবর আসে যে
কাগজের পাতা ভরে,
জীবন পাতার অনেক খবর
রয়ে যায় অগোচরে।
কেউ তো জানে প্রাণের আকুতি
বারে বারে সে কি চায়।
স্বার্থের টানে প্রিয়জন কেন
দূরে সরে চলে যায়।
ধরণীর বুকে পাশাপাশি তবু
কেউ বুঝি কারো নয়।
দু:খের দহনে করুণ রোদনে
তীলেতীলে তার ক্ষয়।”
কিছু গান নিজের জীবনের গল্পের সাথেই মিলে যায়। সঙ্গীতশিল্পী আব্দুল জব্বারের গাওয়া কালজয়ী গান ‘তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়’ সুর সম্রাট সত্য সাহার সুরে এই জীবনমুখী গানটি লিখেছেন, ড.মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান।
এই গানটি আজ আব্দুল জব্বারের নিজ জীবনের সাথেই মিলে গেছে।
যে মানুষটি স্বাধীনতার গান গেয়ে সবাইকে প্রেরণা দিয়েছেন তিনি আজ বাঁচার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন।
তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘যখন লাইফ সাপোর্টে থাকব তখন অনেকে দেখতে আসবেন! মারা গেলে শহীদ মিনারে রাখা লাশে ফুল দেবেন। কিন্তু আমার এসব কিছুর দরকার নেই। আমি আরো কিছুদিন বাঁচতে চাই। আর এজন্য আমার কিছু টাকা দরকার। কিছু টাকা দিয়ে আমায় সহযোগিতা করুন।’ নিজের কষ্টের কথা এভাবেই বলছিলেন আব্দুল জব্বার।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তার গাওয়া ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ সহ বেশ কিছু গান জনপ্রিয়তা পায়। অবদান রেখেছেন চলচ্চিত্রের গানে। পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক (১৯৯৬), একুশে পদক (১৯৮০) সহ বিভিন্ন সম্মাননা।
অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী আব্দুল জব্বার। শরীরে জটিল রোগ নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নেফ্রোলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তার কিডনির অবস্থা একদমই ভালো না। হার্টের ভাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। কোমরে ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে।
আব্দুল জব্বারের চিকিৎসা করাতে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা দরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন বিত্তশালীও এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু বাকি মোটা অঙ্কের টাকা কীভাবে জোগাড় হবে জানে না তার পরিবার।
বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, শিল্পী আব্দুল জব্বার ক্রনিক কিডনিজ ডিজিস (সিকেডি) স্পেস ফোরে ভুগছেন। তার লিভারে সমস্যা রয়েছে। এখন নেফ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. শহীদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তাকে মুখে ওষুধ দেয়া হচ্ছে। এখনো তার ডায়ালাইসিসের দরকার হচ্ছে না।
‘তিনি মৃত্যুর পর শান্তনা সম্মানী চায়না, সুস্থ ভাবে বাঁচতে চান। শিল্পীরা দুস্থ নয়, প্রত্যেক কাজের নিদিষ্ট মেয়াদের পর সবাইকে অবসরে যেতে হয়। তিনি যে পেশারই হোন। প্রত্যেক শিল্পীর বেলায়ও তাই। শ্রদ্ধেয় আব্দুল জব্বার তার সময়ে অসংখ্য কালজয়ী উপহার দিয়েছেন।
ওরে নীল দরিয়া, এখনো ওপার এপার দুই বাংলায় গাওয়া হয়। ‘তারা ভরা রাতে, শত্রু তুমি বন্ধু তুমি, আমি তো বন্ধু মাতাল নয়, এক বুক জ্বালা নিয়ে, সহ অনেক গান আছে যা বিভিন্ন টেলিভিশন, বেতার, মোবাইল প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন ম্যাধ্যমে গাওয়া ও প্রচারিত হয়। উনার গানের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় করে নিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সবাই যদি মানবতার নৈতিক দিক বিবেচনা করে এগিয়ে আসে তাহলে আব্দুল জব্বারের মতো গুণী শিল্পীদের চিকিৎসার জন্য কখনো আর্থিক সংকট হতোনা।
তিনি সঙ্গীতাঙ্গনের মাধ্যমে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং সহযোগীতা চেয়েছেন।
তাই সবাইকে আহবান করছি মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসুন।
আব্দুল জব্বার এর ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার – +৮৮০১৭২০১৭২৪৫৬
এই নাম্বারে ফোন দিয়ে সরাসরি উনাকে সহযোগীতা করুণ।
অকারণে ফোন দিয়ে কেউ ফোন ব্যস্ত রাখবেন না।
সবাই একত্রিত ভাবে এগিয়ে আসুন।
একটি সুর ধ্বনি বেঁচে থাকুক।