asd
Saturday, November 16, 2024

গানের পিছনের গল্প – “ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া”…

প্রিয় পাঠক,
অভিনন্দন এবং ভালোবাসা নিবেদন করছি আপনাদের প্রতি। সঙ্গীতাঙ্গন এর উদ্দেশ্য সবসময়ই দেশের সকল সুরকার, গীতিকার, শিল্পী এবং সব ধরনের মিউজিসিয়ানদের পাশে থেকে আমাদের দেশীয় সঙ্গীতকে অনেক দুর এগিয়ে দুর নিয়ে যেতে। আমরা চাই সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমে যেকোনো গানের আসল স্রষ্টা সম্পর্কে জানুক। এ জন্য আমরা সব সময় আপনাদের সহযোগীতা কামনা করছি।
কারণ দেশের একাধিক চ্যানেলে এ প্রজন্মের শিল্পীরা গানটির স্রষ্টাদের নাম না বলতে পেরে সংগ্রহ বলে থাকেন। এতে গানের মূল স্রষ্টা ব্যথিত হোন, এমন অনেক অভিযোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই একটি গানের মূল স্রষ্টাকে পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে আমরা বহুদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছি, শুধুমাত্র সঙ্গীতকে ভালোবেসে। এবারের বিষয় ‘একটি গানের পিছনের গল্প’ আমাদের অনেক প্রিয় একজন সঙ্গীতপ্রেমী ভাই জনাব মীর শাহ্‌নেওয়াজ সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমে জানাবেন আমাদের প্রিয় গানের পিছনের গল্প। এবং দেশের বরেণ্য সকল শ্রদ্ধাভাজন শিল্পীগন আপনারাও নিজ দায়িত্বে সঙ্গীতাঙ্গনের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনার নিজ সৃষ্টি অথবা আপনার প্রিয় গানের গল্প। এতে আর এ প্রজন্মের শিল্পীরা ভুল করবেন না গানের স্রষ্টাকে চিনতে।
আসুন সবাই গানের সঠিক ইতিহাস জানতে একতা গড়ি। – সম্পাদক

– তথ্য সংগ্রহে মীর শাহ্‌নেওয়াজ…

শিল্পীঃ মোহাম্মদ আবদুল জব্বার
সুরকারঃ আলম খান
গীতিকারঃ মুকুল চৌধুরী
ছায়াছবিঃ সারেং বউ (১৯৭৭)

১) ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া
https://www.youtube.com/watch?v=NxLx1yApOTs

গানটির সুরকার আলম খান -এর জবানীতে শুনুন গান সৃষ্টির পিছনের গল্প।

কালজয়ী গান হিসেবে প্রথমেই বলবো মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের গাওয়া ‘ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া’ সারেং বউ ছবির এই গানটির কথা। গানটির অস্থায়ী সুরটা আমার ১৯৬৯ সালে করা। ১৯৬৯ সালে একটু অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। খিদে লাগত না, নানা রকম শারীরিক অসুবিধা ছিল। বি-চৌধুরীর [ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী] ট্রিটমেন্টে ছিলাম। একদিন বিকেলে একটু সুস্থ ফিল করছি, গুনগুন করে সুরটা মাথায় আসে। কিন্তু তখন সুরের ওপর কথা লেখা হয়নি। আমি মনের মতো কোনো দৃশ্য পাইনি বলে কোনো ছবিতে সুরটি ব্যবহার করতে পারিনি। তবে কোনো জায়গায় ব্যবহার করার সুযোগ পাইনি, সারেং বৌতে পেলাম।

অ্যাকচুয়ালি যেটি চিন্তা করেছিলাম, যাঁরা গানবাজনা জানেন, তাঁরা বুঝবেন – এতে ভূপালি, বিলাবল—এ দুটি রাগের সঙ্গে আমাদের মাটির সুরের মিশ্রণ করেছি। আমার মনে হয়, এর জন্যই এটি এত জনপ্রিয়, এগুলোরই ফসল গানটি। এরপর ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে আবদুল্লাহ আল-মামুন (প্রয়াত) এলেন তাঁর ‘সারেং বউ’ ছবিটি নিয়ে। সারেং বাড়ি ফিরছে – এ রকম একটি সিকোয়েন্স তিনি আমাকে শোনান। ওইখানে দেখা যাবে, সারেং গান গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরছেন। আর তাঁর স্ত্রী সেটি স্বপ্নে দেখছে। তখন আমি গানটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাখা ওই সুরটি গীতিকার মুকুল চৌধুরীকে (প্রয়াত) শোনাই। তিনি তখন সুরের ওপর ‘ওরে নীল দরিয়া’ পুরো মুখটি লিখে দেন। তিনি দুই দিন পর গল্প অনুযায়ী অন্তরাসহ লিখে নিয়ে এলেন। আমি তাঁর কথার ওপরই সুর করি।

আমি মামুন ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলাম সারেং কীভাবে বাড়ি ফিরছে। তখন তিনি বললেন, প্রথম অন্তরায় ট্রেনে, দ্বিতীয় অন্তরায় সাম্পানে, এরপর মেঠোপথ ধরে ফিরবে। দৃশ্য অনুযায়ী ট্রেনের ইফেক্ট, সাম্পান, বইঠা, পানির ছপছপ শব্দ এবং শেষে একতারার ইফেক্ট তৈরি করলাম। গানটি কাকে দিয়ে গাওয়ানো যায়, যখন ভাবছিলাম, তখন আবদুল্লাহ আল-মামুনই আব্দুল জব্বারের কথা বলেন। গানটি কাকরাইলের ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিওতে রেকর্ডিং হয়েছিল। এই গানে ১২ জন রিদম প্লেয়ারসহ ১০ জন বাদ্যযন্ত্রশিল্পী বাজিয়েছিলেন।” -আলম খান…

Related Articles

2 Comments

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles